নির্বাচনের বড় একটা লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত থাকুন; ডা.শফিকুর রহমান
নরসিংদী প্রতিনিধি: জামায়েতে ইসলামী’র আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন,নির্বাচন হতে হবে। তবে যেন তেন মার্কা নির্বাচন আমরা চাইনা। নির্বাচনের মতো নির্বাচন চাই। সুষ্ঠ নির্বাচন চাই। যে নির্বাচনে পেশি শক্তি আর কালো টাকার খেলা চলবে না, এটা সহজে আসবে না। আমরা বুঝতে পারছি। এর জন্য বড় একটা লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত থাকুন। শুক্রবার বিকেলে সাঠির পাড়া কালী কুমার ইনস্টিটিউশন স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে বাংলাদেশ জামায়েতে ইসলামী নরসিংদী জেলা শাখার উদ্যেগে বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জামায়েতে ইসলামী এর আমীর ডা. শফিকুর রহমান আরো বলেন, জুলায়-আগষ্টে ২৪ এই জাতিকে একাটা ধাক্কা দেওয়া হয়েছে। আরেকটি ধাক্কা এই জাতিকে দিতে হবে। অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য ভোটার তালিকা সংশোধন করতে হবে। ভূয়া ভোটার বাদ দিতে হবে। মৃত ভোটারদের চিহ্নিত করে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। যে সকল সমস্ত লোকেরা ভোটার হয়েছে, কিন্তু নাম তালিকা ভূক্ত হয়নি। সে সমস্ত ভোটরদের তালিকা ভূক্ত করতে হবে। জুলাই আগষ্টের আন্দোলন সফল করতে সারা বিশে^র মানুষ বাংলাদেশের সাথে হাত মিলিয়ে একাকার ছিল। তিনি আরো বলেন, স্বৈরাচর পতন আন্দোলন করতে গিয়ে বিদেশে আমাদের ভাইয়েরা জেলে গিয়েছেন। তারা এক সাথে আমাদের সাথে যুদ্ধ করেছে। রেমিটেন্স বন্ধ করে স্বৈরচার সরকারকে লাল পতাকা দেখিয়ে ছিল। তাদেরকে স্যালুট জানাই বাংলাদেশ জামায়েতে ইসলামী। আমরা চাই এই নির্বাচনে প্রত্যেকটা প্রবাসী ভাই বোনের ভোটার নিশ্চিত করতে চাই। তিনি আরো বলেন, মাঠ প্রশাশনে যারা আছেন। যারা আতিথে দায়িত্বের পরিচয় দিতে পারেন নাই। দায়িত্ব হীনতার পরিচয় দিয়েছেন। যাদের হাত থেকে জনগনের কেনা পয়সার বুলেট জনগনের বুকে বিধেছে। আমরা আগামী নির্বাচনে তাদের কোন দায়িত্বে দেখতে চাইনা। কথা এক দম সাফ। এখানে কোন দানাই ফানাই নেই। তিনি প্রশাশনের যে পর্যায়ে থাকুকনা কেন? প্রশাসনের সৎ ও দেশ প্রেমিক যারা আছেন,তাদের সাথে হাত মিলিয়ে দেশ বাসী কাজ করবে ইনশাল্লাহ্। জুলাই শহীদদের স্বপ্ন বাস্তাবায়নে জামাতের আপোশহীন লড়াই চলবে। অন্তবর্তী কালিন সরকারকে উদ্যেশে করে ডা. শফিকুর রহমান আরো বলেন, খুনিদের বিচার করতে হবে। প্রয়োজনে সংকার সাধন করতে হবে। তারপর একটি সুষ্ঠ নির্বাচন সম্পন করতে হবে। এই তিনটি জনগনের দাবী। যতটুকু সময় পান,কিছু কাজ তো আপনাদেরও করতে হবে। দৈনন্দিননের কিছু কাজ ও উন্নয়নের কিছু কাজ। আপনার আবার যেন নতুন করে কোন বেইনসাফী না করেন। ইনসাফের ভিত্তিত্বে করবেন। ২৪ এর গনহত্যায় অনেক মানুষ জীবন দিলো। অনেক লাশ গুম করে ফেলেছে। আমার সেসব লাশের সন্ধান এখনো পাই নাই। ঢাকার সাভারের আশুলিয়া ট্রাক সাড়িবদ্ধ। লাশ ছুড়ে মারা হয়েছে ট্রাকের উপর। ছিটকে দেওয়া হয়েছে লাশের উপর পেট্রোল। ধরিয়ে দেয়া হয়েছে আগুন। বানিয়ে ফেলা হয়েছে ছাই। এদের কোথায় খুজে পাবো। ৩/৪ আগষ্ট দুই দিন ইন্টারনেট বন্ধ করে মানুষকে মেরে লাশ গুলো গুম করে ফেলা হয়েছিল। আজকে যেখানেই যাই সন্তান হারা,স্বামী হারা,পিতাহারা পরিবারের আহাজারী শুনতে পাই। ৫ তারিখের পর নরসিংদীতে এখন আর কেউ চাঁদাবাজি করে কিনা জানতে চায় জামায়েতে ইসলামীর আমীর। চাঁদাবাজির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, শুধ একজন পানের দোকানদারকে বলা হয় সকালের খাজনা দিয়ে ব্যাবসা করবা। অসহায় মানুষ ভিক্ষার বাটি হাতে নিয়ে বসে। তারা বলে এখানে ভিক্ষা করতে হলে খাজনা দিতে হবে। এভাবে ঘাটে ঘাটে চাঁদা। জনে জনে চাঁদা। অতিষ্ঠ সাধারন মানুষ। আপনি একটি বাড়ী বানাবেন-দেখবেন- মানব রূপী দানবরা এসে হাজির হয়ে বলবেন, চাচা বা বড় ভাই বাড়ি বানান অসুবিধা নেই। আমাদের খেয়াল রাখবেন। আমাদের সন্তানেরা কি এই জন্য জীবন দিয়েছিল ? তোমরা যারা শহীদ হয়ে জাতীকে ঋন করেছো। আমরা আল্লাহর নামে শপথ করে তোমাদের কথা দিচ্ছি তোমাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার আমাদের আপোশহীন লড়াই চলবে। এই সমাজ থেকে চাঁদাবাজী দুর্নিতি দুশাষন যতক্ষন পযর্ন্ত বিদাই না নেবে। ততক্ষন আমারদের লড়াই চলবে। জামায়াতের আমীর বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শুরু করে দেশের সব কটি কার্যালয় কার্যত সীলগালা করে রাখা হয়েছিল। একমাত্র দল, যে দলের নিবন্ধন কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। দুঃখের বিষয়, ফ্যাসিবাদ আপাতত বিদায় নিয়েছে, কিন্তু আমরা নিবন্ধনটা এখনও ফিরে পাইনি। নিবন্ধনের জন্য এখনো আদালতে লড়াই করতে হচ্ছে। এটা বাংলাদেশের জন্য লজ্জার বিষয়। অন্যায়ের কাছে ফ্যাসিবাদের কাছে মাথা নত না করার কারণে কেড়ে নেওয়া নিবন্ধনটা ফ্যাসিবাদের পরিবর্তনের সাথে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত ছিল। তিনি অবিলম্বে প্রতিকসহ নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান সরকারের কাছে। এ ছাড়া দেশ থেকে পাচার হওয়া টাকা দেশে বিদেশে যেখানেই থাকুক জাল ফেলে ফিরিয়ে এনে সরকারি কোষাগারে জমা করার দাবি করেন জামায়াতের আমীর।
নির্বাচনের বড় একটা লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত থাকুন; ডা.শফিকুর রহমান
