নরসিংদীতে দলীয় নেতাকর্মীদের ভালোবাসায় সিক্ত বিএনপি নেতা খায়রুল কবীর খোকন

নরসিংদী প্রতিনিধি:

বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব ও নরসিংদীর জেলা বিএনপির আহবায়ক খায়রুল কবির খোকন দীর্ঘ সাড়ে ছয় মাস কারাভোগের পর জামিনে মুক্ত হয়ে জেলার নেতাকর্মীদের ফুলের মাল্য বরন্যে অশ্রুসিক্ত ভালোবাসায় নেতাকর্মীরা বরণ করেছেন। মঙ্গলবার (২১ মে) নরসিংদীর চিনিশপুরস্থ তার নিজ বাসভবন ও জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে দলীয় নেতাকর্মীরা তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। নেতাকর্মীদের স্লোগাণ স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে দলীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণ।

খায়রুল কবির খোকন গত ৮ মে জামিনে কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার পর মঙ্গলবারই প্রথম নরসিংদী আসেন।

খায়রুল কবির খোকনের নরসিংদী আসার খবরে কেউবা ফুলের তোড়া, কেউবা ফুলের মালা নিয়ে প্রিয় এই নেতাকে শুভেচ্ছা জানাতে চিনিশপুর বিএনপি কার্যালয়ে ছুটে আসেন। এসময় নরসিংদী জেলা বিএনপি কার্যালয়ে খায়রুল কবির খোকনকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।

এসময় খায়রুল কবির খোকনকে শুভেচ্ছা জানান জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলহাজ¦ মনজুর এলাহী, সহ সভাপতি এড আব্দুল বাসেত,ফায়জুর রহমান, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আকবর হোসেন, শহর বিএনপির সভাপতি গোলাম কবির কামাল, সাধারণ সম্পাদক ফারুক উদ্দিন ভূইয়া, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক দীন মোহাম্মদ দীপু, দপ্তর সম্পাদক আমিনুল হক বাচ্চু, জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি, জেলা মৎসজীবি দলের সভাপতি হাবিবুর রহমান মিলন, জেলা যুবদলের সভাপতি মহসিন হোসাইন বিদ্যুৎ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোকাররম হোসেন ভূইয়া, যুগ্ম সম্পাদক দিদার হোসেন ভূইয়া, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রউফ ফকির রনি,চিনিশপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আওলাদ হোসেন মোল্লা প্রমুখ।

উল্লেখ্য বিগত বছরের ২৫ অক্টোবর দিবাগত রাতে রাজধানীর একটি বাসা থেকে খায়রুল কবির খোকনকে গ্রেফতার করা হয়। ওই বছরের ২৬ জানুয়ারি নরসিংদী জেলা ছাত্রদলের পাঁচ সদস্যের আংশিক কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। ওই কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশী মাইন উদ্দিন ভূঁইয়াকে সিনিয়র সহ-সভাপতি পদ দেওয়া হয়। এতে তার অনুসারী নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে আগুন দেন এবং পরে ভাঙচুর করেন।

এরপর কমিটি বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন পদবঞ্চিতরা। এরই ধারাবাহিকতায় ২৫ মে বিকেলে ছাত্রদলের বহিষ্কৃত নেতারা ছাত্রদলের নতুন কমিটি বাতিলের দাবিতে মোটর সাইকেল বহর নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি জেলা বিএনপির চিনিশপুরের অস্থায়ী কার্যালয়ের সড়কে ঢোকার পর দুর্বৃত্তদের ছোঁড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয় জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও বহিষ্কৃত নেতা ছাদিকুর রহমান ও তার অনুসারী আশরাফুল হক (২২)।

পরে তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। পরে ওই ঘটনায় নিহত ছাদিকুরের ভাই আলতাফ হোসেন বাদী হয়ে নরসিংদী মডেল থানায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, তার স্ত্রী শিরিন সুলতানাসহ জেলা বিএনপির ৩০ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ৩৫ থেকে ৪০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় খোকন উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন নেয় তিনি।

গত বছরের ২৭ শে জুলাই তার জামিনের মেয়াদ শেষে হয়ে যাওয়ার পর খোকন আদালত থেকে আর স্থায়ী জামিন নেয়নি। এরই প্রেক্ষিতে ২৫ অক্টোবর দিবাগত রাত ৩টার দিকে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনকে ঢাকায় তার ভাইয়ের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরদিন তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। পরে আদালতের বিচারক তাকে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। সেই থেকে কারাগারেই ছিলেন খায়রুল কবির খোকন। দীর্ঘ সাড়ে ছয় মাস কারাভোগের পর গত ৮ মে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি লাভ করেন।

শেয়ার করুন:

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।