কার্নিশে ঝুলে থাকা তরুণকে গুলি, এসআই গ্রেফতার
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি রামপুরায় ভবনের কার্নিশে ঝুলে থাকা এক তরুণকে গুলি করে পুলিশ ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর রামপুরায় এক ভবনের ছাদের কার্নিশে ঝুলে থাকা এক তরুণকে গুলি করেন পুলিশের এক কর্মকর্তা। এ ঘটনায় পুলিশের অভিযুক্ত উপ-পরিদর্শক (এসআই) চঞ্চল চন্দ্র সরকারকে গ্রেফতার করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নেতৃত্বে পুলিশের একটি বিশেষ টিম। রোববার (২৬ জানুয়ারি) রাতে পৌনে ১০টার দিকে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। দীঘিনালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকারিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, রোববার রাতে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা থানা এলাকা থেকে পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) চঞ্চল চন্দ্র সরকারকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ ৬টা গুলি করে, এরপর ৩ তলায় পড়ে যাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল তানভীর হাসান জোহার নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের সঙ্গে ছিল ঢাকা থেকে আসা পুলিশের একটি বিশেষ ইউনিট। গ্রেফতারের পর রোববার রাতেই পুলিশি পাহারায় এসআই চঞ্চল চন্দ্র সরকারকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে বলেও জানান ওসি মো. জাকারিয়া। জুলাই আন্দোলন চলাকালে ১৯ জুলাই বিকেল ৩টার দিকে বনশ্রীতে হোটেলে কাজ করে বাসায় ফিরছিলেন আমির হোসেন। বনশ্রী-মেরাদিয়া রাস্তায় দুই পাশে পুলিশ ও বিজিবির গাড়ি দেখে ভয়ে পেয়ে যান তিনি। একপর্যায়ে পাশে থাকা নির্মাণাধীন চার তলা একটি ভবনের ছাদে উঠে পড়েন আমির। তার পিছু পিছু পুলিশও যায়। একপর্যায়ে প্রাণে বাঁচাতে রড ধরে ঝুলতে থাকেন তিনি। পুলিশ সদস্যরা তাকে দেখেই গুলি শুরু করেন। আর নিচে লাফ দিতে বলেন। এরপর আরেকজন পুলিশ তিন তলায় গিয়ে ছয়টা গুলি করে, সেই গুলি তার দুই পা ও উরুতে লাগে। সবগুলো গুলি এক জায়গায় দিয়ে ঢুকে অন্য জায়গায় দিয়ে বের হয়ে যায়। এরপর তিনি তিন তলায় পড়ে যান। এরপর তার চিৎকার শুনে চার-পাঁচজন লোক এসে বনশ্রীর ফেমাস হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে ব্যান্ডেজ ও রক্ত বন্ধ করার পর রাত ১টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেল নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে মেরাদিয়ার বাসায় ফেরেন আমির হোসেন। সেদিনের স্মৃতিচারণ করে আমির হোসেন জাগো নিউজকে বলেছিলেন, ‘সেদিন পুলিশ যাকে পেয়েছে তাকেই গুলি করেছে। আমার কাছে মনে হয়েছে, পুলিশ আমাকে বুকে পেটে মাথায় গুলি করতে পারতো। কিন্তু তারা চেয়েছে আমি যেন লাফ দিয়ে পড়ে যাই। আর এত ওপর থেকে লাফ দিলে মনে হয় না আমি বাঁচতাম। কিন্তু যেসময় গুলি করছিল, মনে হয়েছিল আমি আর বাঁচবো না। আমি যন্ত্রণায় ছটফট আর গড়াগড়ি করছিলাম। এরপর আমার চিৎকার শুনে চার-পাঁচজন লোক এসে আমাকে বনশ্রীর ফেমাস হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ব্যান্ডেজ ও রক্ত বন্ধ করার পর রাত ১টার দিকে আমাকে ঢাকা মেডিকেল নিয়ে যাওয়া হয়। ৫টা গুলি গুলি লাগে পায়ে। একটা গুলি লাগে উরুর পাশে।